মোস্তাক চৌধুরীঃ আগর-আতর-টিলা-চা বাগান বেষ্টিত ও পর্যটন জনপদ সিলেট। এককথায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি সিলেট। এ অঞ্চলের ধুলোমাটিতে বেড়ে ওঠা একজন মানুষ অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরপদার। হবিগঞ্জ জেলার কৃতী পুরুষ ও একজন মানবিক ডাক্তার হিসেবে জনাব তরপদার সুপরিচিত। তিনি দ্যা ই এন টি এন্ড হেড নেক ক্যান্সার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের মহাসচিব, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য, হবিগঞ্জ এসোসিয়েশন ঢাকার সভাপতি ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত। তিনি সিলেট বিভাগের সামাজিক অঙ্গনে একজন পরিচিত মুখ। গরিব দুখী অসহায় মানুষের কাছে খুবই প্রিয়।
এই গুণী মানুষটি সিলেটিদের প্রাণের সংগঠন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন ২০২৫-২৬ কার্যকালের নির্বাচন অনতিবিলম্বে করার জন্য জালালাবাদবাসীর দাবি। জালালাবাদকে সাজাতে, জালালাবাদকে বাঁচাতে এবং কাজের মাধ্যমে সাফল্যের শেখরে উপনীত করতে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন নির্বাচনের বিকল্প নেই। উক্ত জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে সিলেটের রত্ন ডা. কামরুল হাসান তরপদারকে সভাপতি পদে নির্বাচিত করতে দল মত ও পথের উর্ধে উঠে খানিকটা ভাবা উচিত জালালাবাদবাসীর। তাঁকে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত করলে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন নতুন ভাবে সোনালি আলোয় আলোকিত হবে।
অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরফদার একজন স্বজ্জন, সামাজিক, বিনয়ী, পরোপকারী, সৎ ও মানবিক মানুষ। সিলেটের আলোকিত সুর্য, আমাদের অহংকারের বাতিঘর। গরীবের ডাক্তার। তিনি দৃঢ়চেতা একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী।
অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরফদারের জন্ম ১৯৫৭ সালে চুনারুঘাট উপজেলার বালিয়ারী গ্রামে। তাঁর মরহুম পিতা নাসির উদ্দিন তরফদারও একজন নিপাট ভদ্রলোক ও সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন। তাঁর রত্নগর্ভা জননী মরহুম সৈয়দা সিরাজুন্নেছা খানম মৌলভীবাজার জেলা শহরের বড়কাপনের সম্ভ্রান্ত মুসলিম সৈয়দ বাড়ির মেয়ে ছিলেন। এ রত্বগর্ভা মায়ের বাবা পাকিস্তান আমলের একজন জনপ্রিয় ডাক্তার ছিলেন।
অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরপদার ১৯৭২ সালে হবিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাই স্কুল থেকে এসএসসি, ১৯৭৫ সালে বৃন্দাবন কলেজ থেকে আইএসসি পাশ করেন। তিনি ১৯৮১ সালে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। ১৯৯১ সালে তিনি বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিসিয়ানস এন্ড সার্জন থেকে এফসিপিএস, ১৯৯৬ সালে ইন্টারন্যাশনাল কলেজ অব সার্জনস থেকে এফআইসিএস ডিগ্রী অর্জন করেন।
অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরপদার ১৯৮৪ সালে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগ দিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন সময়ে রেজিস্ট্রার ও রেসিডেন্ট সার্জন হিসেবে সিলেট মেডিক্যাল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে কর্মরত ছিলেন।
অধ্যাপক কামরুল হাসান তরপদার জুনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে কাজ করেছেন। ১৯৯৫ সালে তিনি তৎকালীন আইপিজিএমআর (IPGMR) এ সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ২০০০ সালে তিনি সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনির্ভাসিটিতে যোগদান করেন। ২০০৬ সালে তিনি অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনির্ভাসিটির( নাক কান গলা) বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে সততা আর নিষ্টার সাথে দায়িত্ব পালন করেন।
অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরপদার চিকিৎসা পেশার পাশাপাশি অনেক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছেন অৎপ্রেতভাবে। তিনি শত ব্যস্ততার মধ্যেও সপ্তাহে একদিন অথবা মাসে একদিন নিজ এলাকা হবিগঞ্জের রাজনগর মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন করে সিলেট বিভাগের লোকদের ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। এলাকার গরীব অসহায় রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান, পরীক্ষা নিরীক্ষা, ঔষধপত্র বিনামূল্যে বিতরণ করে থাকেন।
সিলেটের গরীব অসহায় মানুষগুলোর ঠিকানা ঢাকায় অবস্হিত ডা. কামরুল হাসান তরপদারের হসপিটাল। সেখানে সিলেটিদের ডাক্তার দেখানো থেকে শুরু করে পরীক্ষা নিরীক্ষা এমন কি অপারেশন পর্যন্ত করে দেন নিজের অর্থায়নে। মৌলভীবাজার হবিগঞ্জ ও সিলেট বিভাগের অনেক গরীব অসহায় দরিদ্র অর্থ বৃত্তহীন মানুষজনকে শুধু তাঁর হসপিটাল নয় অন্য হসপিটালে লক্ষ লক্ষ টাকা খরছ করে অপারেশন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার অহরহ নজির রয়েছে তাঁর।
অধ্যাপক কামরুল হাসান তরপদার নিজ এলাকা হবিগঞ্জে গড়ে তোলেছেন এতিমখানা ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা যার সম্পুর্ন ব্যায়ভার তিনি নিজেই বহন করে থাকেন। এছাড়া ঢাকায়ও একটি এতিমখানা ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা পরিচালনা করে আসছেন দীর্ঘ দিন থেকে। অনেকেই তাঁকে পীর সাব বলেও সম্ভোধন করে থাকেন । অলি আউলিয়ার প্রতি তাঁর যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধা রয়েছে । তিনি একজন ধর্মপ্রাণ মানুষ।
রাজধানী ঢাকায় বাংলাদেশের অন্যতম চিকিৎসাক্রেন্দ্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক (নাক কান গলা) বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরপদার। তিনি শুধু একজন চিকিৎসকই নন, চিকিৎসা ও সমাজ উন্নয়নে, গবেষণায় সমাজ সংস্কৃতিতে একজন দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্ব। শুধু দেশেই নয়, বিদেশ গিয়েও তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞান বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। নেপাল, ভুটান ও ভারতের অনেক মেডিকেলের ছাত্র তাঁর অধীনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ নিয়েছেন হাতে কলমে।
এই সুযোগ্য ব্যক্তিত্ব একজন মানবিক চিকিৎসক। একজন মানবতার ফেরিওয়ালা। এমন একজন মানবিক মানুষকে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত করলে সিলেটের অবহেলিত বঞ্চিত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী বিশেষভাবে উপকৃত হবেন।
ঢাকায় বসবাসরত সিলেটিরা তাঁর কাছ থেকে কেউ খালি হাতে ফিরে আসেননি। আসবেও না। অনেক অসহায় দীন দরিদ্র মানুষজনকে তিনি ঢাকায় নিজ খরছে অপারেশনসহ চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন।
সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে তিনি রাজধানী ঢাকায় সিলেটি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে সিলেট বিভাগের অসহায় দীন দরিদ্র মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন নিয়মিত। বন্যা, খরা প্রাকৃতিক সকল দুযোগে তিনি সিলেটবাসীর পাশে থাকেন, পাশে আছেন। গেল করোনাকালে চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি করুনা সামগ্রী বিতরন, ঘরবন্দী মানুষকে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন প্রতিদিন ঘরে ঘরে এ মহামারীকে উপেক্ষা করে নিজে উপস্থিত থেকে মানবতার ফেরিওয়ালা জানান দিয়েছেন। এবং প্রমাণ করেছেন ডাক্তারী পেশা একটি মানবিক পেশা। কিন্তু এ পেশায় ডাক্তাররা অনেকেই জল্লাদকেও হার মানিয়েছেন।
অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরপদারের মতো মানবধর্মী মহান মানব এ সমাজে পাওয়া রীতিমত দুস্কর। এ রকম মানবিক ডাক্তার এখনও এ সমাজের সহায়তায় আছেন বলে মানুষ এখনও ডাক্তারদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ডাক্তারদের প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ্বাস ও ভালোবাসা এখনও আছে। আর থাকবেও।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরপদার আমেরিকান কলেজ অব সার্জন থেকে ২০১৪ সালে এফ,এ, সি,এস ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯১ সালে তিনি এফ,সি,পি,এস, ১৯৯৬ সালে আন্তর্জাতিক কলেজ অব সার্জন থেকে এফ,আই,সি,এস ডিগ্রি অর্জন করেন।
অধ্যাপক কামরুল হাসান আমেরিকা, চীন, জার্মানী, ইতালি, কুরিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, নেপাল, ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, ও বাংলাদেশের অনুষ্ঠিত নাক- কান- গলা বিষয়ে অনেক সেমিনার কনফারেন্স ও ওয়ার্কসপে অংশগ্রহন করেছেন। ক্যান্সার সোসাইটিসহ অনেক সংগঠনের আজীবন সদস্য। নাক কান গলা বিষয়ে তাঁর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রর্যায়ের প্রকাশিত জার্নালের সংখ্যা ৪৬ টি।
তাঁর পরিবারবর্গ হবিগঞ্জ জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র রাজনগরের তরপদার কর্টেজ বসবাস করছেন। তার এক ভাই পুলিশ বিভাগের এ,এস,পি পদে ঢাকায় সততা আর নিষ্টার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে আমেরিকায় স্হায়ী ভাবে বসবাস করছেন। অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান তরপদারের ৬ ভাই দুই বোনের বিশাল পরিবার। সভাই উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ বিদেশে স্ব স্ব অবস্থানে প্রতিষ্টিত।
অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরপদার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একজন সুপরিচিত গুণী সনামধন্য ডাক্তার। তিনি দেশ – জাতি ও রাষ্ট্রের জন্য অনেক সুনাম কুড়িয়ে এনেছেন। তিনি সিলেটের অহংকার বাংলাদেশের গর্ব। আমাদের পথ চলার প্রেরণার উৎস । তাঁকে সিলেটের প্রাণপ্রিয় সংগঠন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি নির্বাচিত করলে এ সংগঠনটি সাফল্যের উচ্চ শেখরে উপনীত হবে— এটা বৃহত্তর সিলেটের বুদ্ধাজনের কথা।
Leave a Reply