মোস্তাক চৌধুরীঃ হাফিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা রাশেদা বেগমের অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ফান্ডের লাখ লাখ টাকা লুটপাট, স্বেচ্ছাচারিতার কারণে স্কুলটিতে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। লাগাতার শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় পাঠবিমুখ হয়ে পড়ছেন ছাত্রীরা। এতে ক্ষুব্দ অভিভাবকরা গতকাল বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সমাবেশ করেন। সমাবেশ শেষে অভিভাবকরা মৌলভীবাজার জেলার জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে বিদ্যাপীঠের অচলাবস্থা নিরসনে তাঁর হস্তক্ষেপের দাবি জানান।
বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত অভিভাবক সমাবেশে প্রধান শিক্ষিকার দ্রুত অপসারণ, ও স্কুলের অচলাবস্থা নিরসন করে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা, শ্যামলী রানী চন্দ, মীর তৈয়ব আলী, সেলিম রেজা অভিভাবকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন সৈয়দ মুরাদ হোসেন, জাহিদুর রহমান, সৈয়দ দেলোয়ার হোসেন পিপলু দাশ নাছিমা বেগম,মৌলভীবাজার জেলা অভিভাবক ফোরাম সভাপতি আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিফতাহুজ্জামান সাজু।
সামনে অর্ধবার্ষিক ও ২০২৬ সালে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রি-টেস্ট পরীক্ষা। এমন একটা সময়ে শিক্ষকদের ক্লাস বর্জন কর্মসূচি! এই কর্মসূচি চলমান থাকলে ছাত্রীদের লেখাপড়া যে শিকেয় উঠবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
অভিভাকরা মনে করেন, প্রধান শিক্ষিকা রাশেদা বেগমের দুর্নীতি ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কারণে সনামধন্য এ প্রতিষ্ঠানটি আজ মুখ থুবড়ে পড়তে বসেছে। এর দায়ভার নেওয়ার কি কেউ নেই? সম্ভাবনাময় এসব শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়ে প্রধান শিক্ষিকার খেলা করার অধিকার কে দিয়েছে তাকে? স্কুলের অচলাবস্থা নিরসনে কেন আজ অবধি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না? কেনইবা প্রধান শিক্ষিকা রাশেদা বেগমকে অপসারণ করা হচ্ছে না।? এসব প্রশ্ন অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর।
ইতোপূর্বে প্রধান শিক্ষিকার দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও স্কুল ফান্ডের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎসহ নানা অপকর্মের জন্য প্রধান শিক্ষিকার অপসারণের দাবীতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা অভিভাবক জেলার সচেতন নাগরিকসমাজসহ স্কুলের ছাত্রীরা মানববন্ধন করেন ও জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন। কিন্তুু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। জানা যায় প্রধান শিক্ষিকা রাশেদা বেগম স্কুলে অননুমোদিতভাবে অনুপস্থিত রয়েছেন।
এ নিয়ে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন বলে ভূক্তভোগীদের অভিমত। খবর নিয়ে জানা গেছে প্রধান শিক্ষিকা রাশেদা বেগমের দুর্নীতি ও বিদ্যালয় ফান্ডের টাকা হরিল্লুটের বিরোদ্ধে তদন্ত কমিটি করে দেন বিদ্যালয়ের সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মেহনাজ ফেরদৌস। এ তদন্ত কমিটিকে তদন্ত করতে দেননি প্রধান শিক্ষিকা। তাই সভাপতি শোকজ করেছিলেন প্রধান শিক্ষিকাকে। প্রধান শিক্ষিকা শোকজের জবাব না দিয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি তদন্ত কমিটি ও মৌলভীবাজার জেলার সুযোগ্য জেলা প্রশাসক বিরুদ্ধে আদালতে মামলা টুকে দেন।
এমন একটি ঘোলাটে পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ অভিভাবকগণ গতকাল বিদ্যালয়ের অচলাবস্থা নিরসনে বিদ্যালয়ে আসেন এবং এর একটা বিহিত করতে অভিভাবক সভা শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে দাবি জানান অনতিবিলম্বে বিদ্যালয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আনতে দ্রুত ব্যবস্হা নেওয়ার জন্য।
Leave a Reply