ব্রেকিং নিউজ :
বিএনপি যদি রাস্ট্র ক্ষমতায় যায় তাহলে আমরা এই পুলিশকে বিএনপির পুলিশ বানাবো না: জি কে গউছ ময়নুল ইসলাম খানের মমতাময়ী মায়ের মৃত্যুেতে মনুকূলের কাগজ পরিবার গভীরভাবে শোকাহত বিএনপি পেছন দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ায় বিশ্বাস করে না: বড়লেখায় ডা: জাহিদ চুরি হওয়া স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মালামাল উদ্ধার, গ্রেফতার – ১ কুলাউড়ায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে ভিডিও বার্তা দিয়ে ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা সত্যে রাগিনী তুমি-মোস্তাক চৌধুরী অরণ্য ফাউন্ডেশন”-এর উদ্যোগে কাঙ্গালী ভোজ বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির দোয়া ও মিলাদ মাহফিল জিপিএ ৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উপহার সামগ্রী বিতরণ
প্রদীপ নিবিয়া গেল ছালেক চেয়ারম্যানের স্ত্রী মিনু ভাবি-মহিদুর রহমান

প্রদীপ নিবিয়া গেল ছালেক চেয়ারম্যানের স্ত্রী মিনু ভাবি-মহিদুর রহমান

প্রদীপ নিবিয়া গেল
ছালেক চেয়ারম্যানের স্ত্রী মিনু ভাবি
মহিদুর রহমান

“এটা ঠিক হইছে না মিনু! এটা ঠিক হইছে না! এভাবে যাওয়ার কোনো দরকার আছিল না!” স্ত্রীর লাশের পাশে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন ছালেক আহমদ। স্ত্রীর এমন অকাল মৃত্যুর পর তিনি যেন ডানা ভাঙা বিহঙ্গ। চোখেমুখে ছটফটানির করুণ অভিব্যক্তি!

মাত্র চব্বিশ বছরের সংসারজীবন। এই সময়ে কত ঝড়ঝাপটা এসেছে কিন্তু সংসারের প্রদীপ হিসেবে মিনু আপা সবসময়ই অবিচল থেকেছেন। তার বিবাহিত জীবনের দিনগুলো ছিল মায়াময়। নিজের মতো করে সংসারকে সাজিয়েছিলেনও।

আত্মীয়-স্বজনের সাথে সুন্দর সম্পর্ক রক্ষা ছিল তার স্বভাব। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ডায়াবেটিস, রক্তচাপ ইত্যাদি রোগব্যাধি তাকে দুর্বল করে ফেলেছিল। বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিয়েছিলেন কিন্তু অসুখ-বিসুখ পিছু ছাড়ছিল না। তারপরও স্বামী-সন্তানদের প্রতি ছিলেন মাত্রাতিরিক্ত মনোযোগী।

সম্বন্ধি’র স্ত্রী বলে খুব কাছে থেকে দেখার সুযোগ ছিল আমার। আজও পেছন ফিরে তাকালে চোখে ভাসে কুশিয়ারা নদীতীরের গ্রাম কায়েস্তঘাট। আদত জলের জায়গা। নৌকার পথ। ওখানেই ছালেক আহমদের মামাবাড়ি। বড়ো মামার বড়ো মেয়ে মিনু। মিনুর সাথে দারুণ সময় কাটিয়েছেন ছোটবেলায়।

কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা রাখতেই সবার অলক্ষে ভরা নদীতে আসলো বান আর পরানেও পড়লো টান। ছালেক আহমদ যেন মিনুকে বললেন, জানি না কী বাসনা, কী বেদনা গো…। তারপর লগ্ন শুভ দেখে বিবাহ ঠিকঠাক হলো। মহাধুমে সম্পন্ন হলো শুভকাজ।

বাঙালি নাকি আপন স্ত্রীকে সুন্দরী দেখে। কিন্তু না, মিনু আপা আসলেই সুন্দরী ছিলেন। কোনো উৎসব অনুষ্ঠানে গেলে তিনিই সবার নজর কাড়তেন। সেলিনা আমাকে কানে কানে বলতো, দেখো মিনু-আপাই সবার চেয়ে সেরা। সত্যি সাধারণের মাঝে তিনি ছিলেন অসাধারণ।

ছালেক মিয়া দুই হাতে আনতেন আর তিনি দুই হাতে বিলাতেন। সর্বংসহা ধরিত্রীর মতো মেনে নিতেন, মানিয়ে নিতেন। কবির ভাষায় যদি বলি, এতো যে শঠতা, এতো যে ব্যথা তবু যেন তা মধুতে মাখা— এই ছিল তাদের সংসার।

সংসার যাত্রায় জন্ম নিল অর্নিশা- অর্নব- অর্পণ। তিনতিনটা সোনামুখ। মনে পড়ে অর্পনের জন্মের সময় মিনু-আপাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার লোক আসতে দেরী হচ্ছিল। কিন্তু তর সইছিল না ছালেক আহমদের। তিনি একাই কোলে করে পৌঁছে দিয়েছিলেন অপারেশন থিয়েটারে। সেদিন তার শরীরে এতো শক্তি কোথা থেকে এসেছিল জানি না। আজ যেন সেই শকতিও হারিয়ে গেছে!

আজ এই দুর্দিনে অর্নিশা-অর্নব-অর্পণের কান্নায় আকাশ ব্যথাতুর-বিবর্ণ, বাতাস বিহ্বল-ভারী। শোকের মাতম যেন থামছেই না!

একটা সংসারের প্রদীপ এভাবে নিবে যাবে ভাবিনি!

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © Dailymonukulerkagoj.Com
Design & Developed BY Gausul Azam IT