যে উপদেষ্টারা মাইলস্টোন কলেজে যাবার সঙ্গে সঙ্গে অবরুদ্ধ হয়ে গেছেন। এরপর শিক্ষার্থীরা ভুয়া, ভুয়া স্লোগান দিচ্ছে। কেন দিচ্ছে?
এই বাচ্চা বাচ্চা ছেলে-মেয়েগুলো কিন্তু কোন রাজনীতি করে না। ডান-বামের সমীকরণও এখানে নেই। নেই কোন লুটপাট, ঘুষের বাণিজ্য। তাহলে কেন এরা আপনাদের ভুয়া ভুয়া বলছে? কারন এরা নিজ চোখে দেখেছে কত জন মারা গিয়েছে। চোখের সামনে দেখা ঘটনাকে আপনারা গল্প-উপন্যাস বানিয়ে ফেললেন! সংখ্যা দিলেন কমিয়ে! কেন দিলেন? এতে আপনাদের আসলে ফায়দা কী? এরপরও কমিয়ে দিলেন। এরপর সেনাবাহিনী শিক্ষক আর শিক্ষার্থীদের পেটালো। কেন পিটিয়েছে জানেন?
শুধু সংখ্যা কমানোর জন্য নয়। এই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে পাইলটকে হিরো হিসাবে দেখানো হয়েছে। সে নাকি ইজেক্ট না করে শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে চেয়েছিল ইত্যাদি। অথচ মূল ঘটনা কী জানেন? ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে একটা টেলিভিশনে কলজটির এক শিক্ষক বলেছেন- পাইলট প্যারাসুটে করে আলাদা ভবনে এসে পড়েছে। অর্থাৎ পাইলট ইজেক্ট করেছিলো। হয়ত একদম শেষ মুহূর্তে করেছে। যার কারনে সে নিজেও বাঁচতে পারে নাই।
এখানে পাইলটের কোন দোষ নেই। আমি পাইলটকে একদম কোন সমালোচনা করছি না। কিন্তু পাইলটকে ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে হিরো বানানো হলো কেন? তাঁকে তো হিরো বানানোর কিছু নেই এখানে।
এটাই সিস্টেম। এই জনপদে যাদের হিরো হবার কথা, তাঁদের হিরো বানানো হয় না। এই যেমন, যেই শিক্ষিকা নিজের জীবনটা বিসর্জন দিয়ে ২০ জন শিক্ষার্থীকে বাঁচিয়েছে। বলেছে – ‘দৌঁড়াও, ভয় পেয়ো না৷ আমি আছি।’ তাঁর কথা কিন্তু আসেনি প্রথমে। আমাদের সিস্টেমে এলিটরাই কেবল হিরো হয়। কারন ন্যারেটিভ তাঁরাই তৈরি করে।
তো, এই হচ্ছে আমাদের সিস্টেম। এখানে ২০১৩ সালে যে বিমান বানানো বন্ধ হয়ে গেছে পৃথিবী থেকে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী সেই বিমান কিনেছে ২০১৭ সালে! এই নিয়ে কেউ প্রশ্ন করে না কিংবা করতে ভয় পায়। কেন ঢাকার মত জনবহুল শহরে প্রশিক্ষণ বিমান উড়ছে; সেটা নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই!
এখানে চোখের সামনে শতাধিক মানুষ পুড়ে মরে যাবার পর স্রেফ সংখ্যাটার স্বীকৃতির জন্য উপদেষ্টাদের অবরুদ্ধ করে রাখতে হয়। এখানে রাত তিনটার সময় জানা যায়- আজকের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে!
কারন চেয়ারে বসে সবাই সব কিছু রঙিন দেখে। এই জন্য এমনকি সংবাদকর্মীদের সেনাবাহিনী দিয়ে তাড়িয়ে দিতে হচ্ছে, মারতে হচ্ছে। কারন কী জানেন তো?
ভয়! মিডিয়া যদি কিছু দেখে ফেলে! প্রকাশ করে দেয়! সরকার এখন ভয় পায়। কারন তাঁরা জানে- অনেক অন্যায় তাঁরা লুকিয়ে ফেলেছে। এভাবে একসময় অন্যায়গুলো হিমালয় পাহাড়ের মত বড় হতে থাকে। তবুও এরা সব কিছু রঙিনই দেখতে থাকে!
Leave a Reply