ব্রেকিং নিউজ :
বিএনপি যদি রাস্ট্র ক্ষমতায় যায় তাহলে আমরা এই পুলিশকে বিএনপির পুলিশ বানাবো না: জি কে গউছ ময়নুল ইসলাম খানের মমতাময়ী মায়ের মৃত্যুেতে মনুকূলের কাগজ পরিবার গভীরভাবে শোকাহত বিএনপি পেছন দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ায় বিশ্বাস করে না: বড়লেখায় ডা: জাহিদ চুরি হওয়া স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মালামাল উদ্ধার, গ্রেফতার – ১ কুলাউড়ায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে ভিডিও বার্তা দিয়ে ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা সত্যে রাগিনী তুমি-মোস্তাক চৌধুরী অরণ্য ফাউন্ডেশন”-এর উদ্যোগে কাঙ্গালী ভোজ বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির দোয়া ও মিলাদ মাহফিল জিপিএ ৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উপহার সামগ্রী বিতরণ
মৌলভীবাজারে বাবার হাতে শিশু খুন, পুলিশি অভিযানে বাবা গ্রেপ্তার

মৌলভীবাজারে বাবার হাতে শিশু খুন, পুলিশি অভিযানে বাবা গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টার : মৌলভীবাজাররে বাবার হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছে সাত বছরের শিশু মাহিদ। ঘটনার পর শিশুর বাবা খোকন মিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসককে জানায় গাছ থেকে পড়ে এমন ঘটনা হয়েছে। লাশ বাড়িতে না নিয়ে গুম করার চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশের কয়েকটি টিম বাবা খোকন ও লাশ উদ্ধারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। পরে সন্ধ্যা ৭টায় পাহাড়ী টিলায় অবস্থিত নিজ ঘরে শিশুর লাশ গোপনে রেখে ঘাতক পিতা, শিশুর দাদি হাওয়া বেগম গাঁ ঢাকা দেন।
রোববার ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের জগন্নাথপুর গ্রামে লোহমর্ষক ওই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর পুরো এলাকা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। শিশু খুনের ঘটনায় পুরো গ্রামের মানুষ শোকাহত।

মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মাহবুবুর রহমান রবিবার রাতে জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের কয়েকটি টিম ঘাতক পিতা খোকন ও শিশুর লাশ উদ্ধারে তার বাড়ি সহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। শিশুর লাশ বাড়ির পূর্ব পাশে পাহড়ি টিলার কোন এক নির্জন স্থানে রেখে ছিল তার বাবা। বাড়ি থেকে পুলিশ বের হয়ে আসলে এক ফাঁকে লাশ ঘরে রেখে চম্পট দেয় শিশুর বাব। পরে রাতে সদর উপজেলার জেলা কারাগার এলাকা থেকে খোকন মিয়াকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খোকন মিয়া চিহ্নিত মাদক সেবী ও ব্যবসায়ী। এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যাবসা করে আসছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। রোববার বিকালে খোকনের দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে জন্ম নেয়া শিশু মাহিদ বিছানায় মল ত্যাগ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ঘরের বাহিরে এনে ব্যাপকভাকে পিটাতে থাকে ঘাতক পিতা খোকন। এক পর্যায়ে শিশু মাহিদ সেখান থেকে পালিয়ে প্রতিবেশি যোবেদা খাতুন এর ঘরে আশ্রয় নিলে সেখান থেকে ফের ধরে এনে উপর থেকে মাটিতে ছুড়ে মাড়েন। এর পর শিশু মাহিদের দুই পা ধরে কংক্রিটের পিলারে সাথে আছাড় দিতে থাকলে শিশু মাহিদের নাক দিয়ে রক্ত ঝরতে শুরু করে। এ সময় প্রতিবেশি যোবেদা বেগম শিশুটিকে রক্ষা করতেও ব্যর্থ হন। এমন পরিস্থিতিতে শিশুটির অবস্থ সংকটাপন্ন হওয়া খোকন মিয়া নিজেই শিশু মাহিদকে নিয়ে যান মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে। পরে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষনা করেন।

ঘাতক পিতা খোকন মিয়া নিজ ছেলের মৃত্যুর কারণ নিয়ে চতুরতার আশ্রয় নেয়। হাসপাতালের খাতায় লিখান গাছ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে। এর পর সেখান থেকে লাশ নিয়ে বাড়ি যাওয়ার কথা বলে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সদর মডেল থানা পুলিশ উপস্থিত হলেও সেখানে লাশ ও খোকন মিয়াকে পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যা ৭ টার দিকে লাশ নিয়ে খোকন নিজ ঘরে হাজির হয়ে সেখানে লাশ রেখেই সটকে পড়ে। তবে তার প্রথম স্ত্রী ও নিহত শিশু মাহিদ এর আরেক ভাইকে ঘরেই পাওয়া যায়। আশপাশে তল্লাশি চালিয়েও পুলিশ সেখানে খোকন ও তার মা হাওয়া বেগমের কোন খোঁজ না পেয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার জেলগেট এলাকা থেকে তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
প্রতিবেশি যোবেদা বেগম জানান, বাচ্চাটাকে দুই পা ধরে কংক্রিটের পিলারের সাথে মাথা মারতে থাকে। তখন তাঁর নাক দিয়ে রক্ত পড়ছিল। মারধর করার সময় তাঁকে উদ্ধারে আমি এগিয়ে গেলে আমাকে অন্তত দশহাত দূরে টেনে নিয়ে যায়। তবে এসময় অন্য কেউ সেখানে ছিলনা বলে জানান ওই নারী।
জানা যায়, ১৫ বছর আগে প্রথম স্ত্রী রেখে তানিয়া আক্তার নামে এক নারীকে বিবাহ করে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে ঘরে তুলেন খোকন। ওই স্ত্রীর সাথে মলমালন্য হওয়ায় কয়েক বছর আগে স্বামী খোকন মিয়াকে ছেড়ে অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেও মাহিদ ও রাফিদ নামে ৫ ও ৭ বছর বয়সী দুই শিশুকে রেখে দেন খোকন। এর পর থেকে মা ছাড়া বাবা খোকন মিয়ার কাছেই থাকত দুই শিশু।

স্থানীয়রা বলছেন অনেক দিন যাবত তুচ্ছ কারণে তাদের দুই শিশুর প্রতি অমানবিক নির্যাতন চালাতেন মাদকাসক্ত বাবা খোকন মিয়া। নির্যাতনের নির্মম দৃশ্য প্রতিবেশির চোখে ধরা পড়লেও ভয়ে তাদের কেউ এগিয়ে আসার সাহস করেনি।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © Dailymonukulerkagoj.Com
Design & Developed BY Gausul Azam IT